পীরগঞ্জ, রংপুর প্রতিনিধি
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় দৈনিক বায়ান্নর আলো পত্রিকার পীরগঞ্জ প্রতিনিধি মিফতাহুল ইসলামকে মারধর ও প্রেসক্লাবে জোরপূর্বক অনধিকার প্রবেশের প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার বিকেলে পীরগঞ্জ ক্লাব চত্বরে বাংলাদেশ প্রেসক্লাব পীরগঞ্জ উপজেলা শাখা ও পীরগঞ্জ প্রেসক্লাবের যৌথ উদ্যোগে এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা আয়োজন করা হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন পীরগঞ্জ প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক শাহ মোঃ সাদা মিয়া। বক্তব্য রাখেন সাপ্তাহিক বজ্রকথার সম্পাদক ও প্রকাশক সুলতান আহম্মেদ সোনা, সাংবাদিক মাজহারুল আলম মিলন, আব্দুল হাকিম সরকার, হাবিবুর রহমান হাবিব, বখতিয়ার রহমান, আব্দুল করিম সরকার, বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, মাহমুদুল হাসান, নির্যাতিত সাংবাদিক মিফতাহুল ইসলাম, পীরগঞ্জ বণিক সমিতির সভাপতি সাইফুল আজাদ প্রমুখ।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি মনোনয়নপ্রত্যাশী হাবিবুর রহমান পল্টন ও তার সহযোগীরা গত মঙ্গলবার বিকেলে প্রেসক্লাবের চাবি কেড়ে নিয়ে হলরুমে প্রবেশ করে জোরপূর্বক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। এ সময় তারা সাংবাদিক মিফতাহুল ইসলামকে দলবদ্ধভাবে মারপিট করে গুরুতর আহত করেন। সাংবাদিকদের উপস্থিতি ছাড়াই প্রেসক্লাবের ভেতরে সংবাদ সম্মেলন করে তারা ক্লাবের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেন।
এ ঘটনায় উপস্থিত বক্তারা তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। তারা বলেন, প্রেসক্লাব সাংবাদিকদের অভয়াশ্রম—এখানে জোরপূর্বক প্রবেশ ও হামলার মতো ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে স্বাধীন সাংবাদিকতা বাধাগ্রস্ত হবে।
মানববন্ধনে পীরগঞ্জের সকল সাংবাদিক ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ অংশ নেন। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচিতে এলাকাজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করে।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার দুপুরে পীরগঞ্জ পৌরসভার নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন হাবিবুর রহমান পল্টন। এ জন্য তিনি আগের দিন মাইকিং করে সংবাদ সম্মেলনের ঘোষণা দেন। তবে প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষ স্থান সংকুলান ও অন্যান্য কারণে হলরুম ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত জানায়। পরে আয়োজকরা বিকল্প স্থানে সংবাদ সম্মেলন করার কথা জানালেও পৌরসভার ময়লা ফেলার কারণে স্থানটি অযোগ্য হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে তারা প্রেসক্লাবের চাবি কেড়ে নিয়ে হলরুমে প্রবেশ করে সংবাদ সম্মেলনের চেষ্টা করে।
এ সময় মিফতাহুল ইসলাম প্রতিবাদ করলে তাকে বেদম প্রহার করা হয়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় হাবিবুর রহমান পল্টন নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদল নেতা পরিচয় দিয়ে সাংবাদিকদের হুমকি প্রদর্শন করেন।
ঘটনার পর থেকেই পীরগঞ্জের সাংবাদিক সমাজে চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।