রাজশাহী প্রতিনিধি
রাজশাহীতে ছয় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা দায়েরের প্রতিবাদে এবং শাহমখদুম থানার ওসিকে প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে রাজশাহী নগরীর সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। এতে রাজশাহী বিভাগীয় প্রেসক্লাব, রাজশাহী প্রেসক্লাব, অনলাইন সাংবাদিক ফোরাম, ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন, জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা রাজশাহী শাখাসহ বিভিন্ন সংগঠনের সাংবাদিকরা অংশ নেন।
বক্তারা বলেন, মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে এবং ওসিকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণ করতে হবে। অন্যথায় সাংবাদিক সমাজ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কঠোর আন্দোলনে নাম,বে।
ঘটনাপ্রবাহ
গত ২৬ আগস্ট অগ্রণী ব্যাংক আরডিএ শাখায় জমি নিলাম সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে কথিত পত্রিকার মালিক পরিচয়দানকারী প্রতারক আক্তারুল ইসলামের সঙ্গে সাংবাদিকদের বাকবিতণ্ডা হয়। এসময় আক্তার এক সাংবাদিকের মোবাইল ভেঙে ফেলেন ও অশালীন আচরণ করেন। ঘটনাটি ভিডিওতে ধারণ হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র সমালোচনা হয়।
পরে সাংবাদিকরা আক্তারের বিরুদ্ধে মামলা করতে চাইলে ওসি মাছুমা মুস্তারী মামলা না নিয়ে কেবল লিখিত অভিযোগ নেন। এরপর সাংবাদিকদের ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশে ক্ষুব্ধ হয়ে ওসি নিজেই এজাহার প্রস্তুত করে আক্তারের স্বাক্ষর নিয়ে চাঁদাবাজির মামলা নথিভুক্ত করেন (মামলা নং–২/২০২৫)।
এ মামলায় আসামি করা হয়েছে—‘রাজশাহীর আলো’র সম্পাদক ও প্রকাশক আজিবার রহমান, সিনিয়র ফটো সাংবাদিক ফায়সাল আহম্মেদ, আরটিভির ক্যামেরাম্যান আরিফুল হক রনি, কালের কণ্ঠ-এর মাল্টিমিডিয়া প্রতিনিধি নাঈম হোসেন, গণমুক্তির ব্যুরো প্রধান মাজহারুল ইসলাম ও আজকের প্রত্যাশা-র সাংবাদিক নাজমুল হককে।
প্রতারক আক্তার পরে স্বীকার করেন, তিনি মামলার বিষয়ে জানতেন না এবং প্রশাসনের চাপে স্বাক্ষর করেছেন।
সাংবাদিকদের বক্তব্য
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পুলিশের পক্ষপাতমূলক ভূমিকার কারণে সাংবাদিকরা মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছেন। এটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সংবিধান প্রদত্ত অধিকার হরণের শামিল।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের সভাপতি শামসুল ইসলাম, রাজশাহী বিভাগীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি এম এ আরিফ, জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা জেলা শাখার সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদ, অনলাইন সাংবাদিক ফোরামের সাবেক সভাপতি মীর তোফায়েল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সাব্বির হোসেন জাহিদসহ অন্যান্য সাংবাদিক নেতারা।
তারা বলেন, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও ওসিকে প্রত্যাহার না করা হলে সাংবাদিক সমাজ দুর্বার আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।