📍 মুকসুদপুর, গোপালগঞ্জ | আজকের জাগরণ স্পেশাল রিপোর্ট
গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার প্রাণকেন্দ্র মুকসুদপুর পৌরসভার অধিকাংশ রাস্তা বর্তমানে চরমভাবে জরাজীর্ণ। খানাখন্দে ভরা সড়কগুলো যেন জনগণের জন্য এক অনাবিল দুর্ভোগের নাম। বর্ষা মৌসুমে তো যেন সেটি ভয়াবহ রূপ নেয় — সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তাগুলো জলমগ্ন হয়ে পড়ে, ভেসে যায় রাস্তার অস্তিত্ব, তলিয়ে যায় জনজীবন।
📌 গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো চলাচলের অযোগ্য
বিশেষত কালনা-টেকেরহাট আঞ্চলিক সড়কের মুকসুদপুর কলেজ মোড় হতে কমলাপুর ব্রিজ পর্যন্ত অংশটি, যা সদর বাজারের ভেতর দিয়ে অতিক্রম করেছে — তার অবস্থা আজ চরম অবহেলার নিদর্শন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রতিদিন এই পথে হাজার হাজার যানবাহন, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও সাধারণ পথচারীরা যাতায়াত করলেও দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি সংস্কারের কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেই। শুধু আশ্বাসের বন্যা, বাস্তব উদ্যোগ নেই কোনো।
এছাড়াও নিম্নোক্ত এলাকাগুলোর রাস্তার অবস্থাও একই রকম করুণ:
চন্ডীবর্দি সোনালী ব্যাংক মোড় হতে মুকসুদপুর পাইলট স্কুল হয়ে সাবেক অগ্রণী ব্যাংক ভবন পর্যন্ত
গোপীনাথপুর গ্রামের ফরিদ মিয়া কমপ্লেক্স হতে উপজেলা পরিষদের দক্ষিণ পাশ হয়ে তেরাইছে মোড় পর্যন্ত
গোপীনাথপুর আবু সালেহ চেয়ারম্যানের বাড়ি হতে সরকারি মুকসুদপুর কলেজ পর্যন্ত
টেংরাখোলা আতিয়ার ইঞ্জিনিয়ারের বাড়ি হতে সাংবাদিক কাজী ওহির বাড়ি হয়ে মরহুম খোকা শরিফের বাড়ি পর্যন্ত
প্রতিটি সড়কেরই চিত্র প্রায় একই — বড় বড় গর্ত, ভাঙাচোরা ইট-সুরকির স্তূপ, জায়গায় জায়গায় জমে থাকা কাদাপানি। কোথাও কোথাও তো খাল মনে হয়! এইসব রাস্তা দিয়ে চলতে গিয়ে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন পথচারী, শিক্ষার্থী এবং চালকেরা।
🏫 শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে দুর্ভোগ
এসব রাস্তায় যাতায়াত করে সরকারি মুকসুদপুর কলেজ, কেজি স্কুল, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সরকারি এস.জে. উচ্চ বিদ্যালয়, মুকসুদপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, কামিল মাদ্রাসাসহ প্রায় ডজনখানেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাজারো শিক্ষার্থী।
একজন অভিভাবক বলেন,
> “আমার সন্তান প্রতিদিন পানিতে ভেজা রাস্তা পেরিয়ে স্কুলে যায়। বৃষ্টি হলে পা পিছলে পড়ে যায়। এই কষ্ট আর কতদিন সহ্য করব?”
🚛 যানবাহনের চালকদের নাভিশ্বাস
অটোভ্যান, ইজিবাইক, মোটরসাইকেল এমনকি ছোট পিকআপ চালকদের কষ্টের যেন সীমা নেই। গাড়ি রাস্তায় আটকে গেলে যাত্রীও বিরক্ত হন, চালকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হন।
স্থানীয় ইজিবাইক চালক সোহেল শেখ জানান,
> “দিনে পাঁচবার গাড়ি মেরামত করতে হয়। গর্তে পড়ে যাত্রী পড়ে যায়, গালি শুনি। কিন্তু আমাদের দোষ কি?”
🛑 দীর্ঘদিন সংস্কারহীনতা: দায় কার?
এলাকাবাসীর অভিযোগ, পৌরসভার নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক নেতারা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিলেও নির্বাচন শেষ হলেই তারা আর ফিরে তাকান না। রাস্তাঘাটের অবস্থা নিয়ে একাধিকবার আবেদন ও দরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানা যায়, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
একজন বয়োজ্যেষ্ঠ স্থানীয় বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
> “এই রাস্তা দিয়ে আমরা ৩০ বছর ধরে চলছি। উন্নয়নের অনেক গল্প শুনি, কিন্তু এই রাস্তা সেই আগের মতই আছে। বরং আরও খারাপ হয়েছে।”
📣 এলাকাবাসীর দাবি: দ্রুত সংস্কার
জনগণ এখন আশ্বাস নয়, বাস্তব পরিবর্তন চায়। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকার, পৌর প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট প্রকৌশল বিভাগকে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
তারা জানান,
> “অধিক সময় নিলে সাধারণ মানুষকে নিয়ে রাস্তায় নামতে বাধ্য হব। দীর্ঘদিনের অবহেলা আর মেনে নেওয়া যাবে না।”
—
🗣️ জনগণের মুখে একটাই দাবি:
“মুকসুদপুর পৌরসভার রাস্তাঘাট সংস্কার চাই, এখনই চাই।”
Leave a Reply