মোঃ মিনারুল ইসলাম
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি
‘শিক্ষকের কন্ঠস্বর, শিক্ষায় নতুন সামাজিক অঙ্গীকার’—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত হয়েছে।
আজ ৫ অক্টোবর (রবিবার), উপজেলা প্রশাসন ও শিক্ষক সমাজের যৌথ উদ্যোগে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালিত হয়। শিক্ষকদের অধিকার, দায়িত্ব ও শিক্ষার মানোন্নয়নে তাঁদের ভূমিকার গুরুত্ব তুলে ধরে এই আয়োজনে উপজেলার সকল স্তরের শিক্ষক-শিক্ষিকারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।
দিবসটি উপলক্ষে সকালে উপজেলা অডিটোরিয়াম থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালিটি দামুড়হুদা উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা চত্বরে এসে শেষ হয়।
এতে অংশগ্রহণ করেন উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ।
র্যালি শেষে উপজেলা পরিষদ হলরুমে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ ও শিক্ষা বিভাগের পদাধিকারীরা।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দামুড়হুদা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তিথি মিত্র। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা ভূমি বিষয়ক কর্মকর্তা কে এইচ তাসফিকুর রহমান।
এছাড়াও, শিক্ষা ক্ষেত্রে সরকারের লক্ষ্য ও শিক্ষকদের করণীয় নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আতাউর রহমান, প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আবু হাসান, এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ রোকনুজ্জামান খান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মোঃ রাফিজুল ইসলাম। ইন্সট্রাক্টরবৃন্দ এবং অত্র উপজেলার সকল স্তরের শিক্ষক-শিক্ষিকা বৃন্দও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে শিক্ষকদের মর্যাদা ও সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তিথি মিত্র তাঁর বক্তব্যে শিক্ষকদের জাতি গঠনের কারিগর হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, “একটি উন্নত জাতি গঠনে শিক্ষকের ভূমিকা অপরিসীম।
জ্ঞানভিত্তিক সমাজ নির্মাণে তাঁদের নিবেদিত প্রচেষ্টাকে আমাদের সর্বোচ্চ সম্মান জানাতে হবে। আজকের প্রতিপাদ্যটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। শিক্ষকদের সম্মিলিত কন্ঠস্বরই শিক্ষাব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও আধুনিক শিক্ষণ পদ্ধতির ব্যবহারে প্রশিক্ষিত করে তুলতে উপজেলা প্রশাসন সবসময় পাশে থাকবে। শিক্ষকরা যেন যথাযথ মর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা নিয়ে পাঠদান করতে পারেন, সেদিকে লক্ষ্য রাখা আমাদের দায়িত্ব।”
আলোচনা সভায় শিক্ষক প্রতিনিধিরা তাঁদের বক্তব্যে শিক্ষকদের নানা সমস্যা ও প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেন। তাঁরা গুণগত মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে সরকারের পাশাপাশি সমাজের সকল স্তরের সহযোগিতা কামনা করেন।
শিক্ষকরা তাঁদের পেশাগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আরও বেশি সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় সমর্থন প্রত্যাশা করেন।
উপস্থিত অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দও তাঁদের বক্তব্যে শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কল্যাণে শিক্ষকদের নিরলস প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ জানান।
সবশেষে, উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মোঃ রাফিজুল ইসলাম সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
অনুষ্ঠানটি সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় শিক্ষক সমাজ সন্তোষ প্রকাশ করে এবং প্রতি বছর এ ধরনের আয়োজন করার জন্য উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানায়।