📰 আজকের জাগরণ
তারিখ: ০৯/০৬/২০২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক, গোপালগঞ্জ:
টেকনোলজির চরম উৎকর্ষতার এই যুগে দাঁড়িয়ে আজ আমরা ফিরে তাকাই সেই সময়ের দিকে, যেটি ছিল সরলতা, আন্তরিকতা আর মানবিক সম্পর্কের এক অনন্য সময়। নব্বই দশক — ১৯৯০ থেকে ১৯৯৯ সাল — বাঙালির জীবনধারায় এক আবেগঘন, স্নিগ্ধ অধ্যায়।
—
📺 এক চ্যানেলের হাজারো রঙ
BTV-ই ছিল সেই সময়ের একমাত্র টিভি চ্যানেল। ‘ইত্যাদি’, ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘এইসব দিনরাত্রি’, ‘অয়োময়’—এসব অনুষ্ঠান দেখার জন্য পরিবার একসঙ্গে বসে অপেক্ষা করত শুক্রবার সন্ধ্যায়। শিশুদের জন্য ছিল ‘নতুন কুঁড়ি’, ‘মীনাবাজার’, আর রবিবারের সকালের কার্টুন অনুষ্ঠান।
—
🏏 গলির ক্রিকেট আর মাঠের ডাক
খেলাধুলা ছিল তখনকার প্রধান বিনোদন। গলির ক্রিকেট, ‘দাড়িয়াবান্ধা’, ‘বউচি’, ‘লুকোচুরি’, কিংবা হাড়িপাতিলের খেলা—সবই ছিল পাড়ার প্রাণ। মাটির মাঠে ঘন্টার পর ঘন্টা খেলা, ঘাম ঝরিয়ে দিন কাটানো — মোবাইল বা ভিডিও গেমের নামগন্ধও ছিল না।
—
📻 ক্যাসেটের দিনগুলো
সেই সময় গান শুনতে হলে চাই হতো টেপ রেকর্ডার আর প্রিয় শিল্পীর ক্যাসেট। আইয়ুব বাচ্চু, জেমস, হাসান, পার্থ বড়ুয়া—ব্যান্ড সংগীতের জাদুতে ভেসে যেত তরুণ মন। পাশাপাশি হিন্দি গানে কুমার শানু, উদিত নারায়ণ, অলকা ইয়াগনিকের আধিপত্য।
—
✉️ চিঠি, টেলিফোন ও ভালোবাসার সরলতা
মোবাইল না থাকায় দূরের প্রিয়জনের সঙ্গে যোগাযোগ হতো চিঠির মাধ্যমে। “ডিয়ার বন্ধু”, “তোমার অপেক্ষায়” — এমন শব্দে শুরু হওয়া চিঠি আজো অনেকের মন কাঁদায়। বাড়িতে ল্যান্ডফোন থাকাটা ছিল গর্বের বিষয়, আর টেলিফোনে ২ মিনিট কথা বলাও ছিল উৎসবের মতো।
—
🍭 সাদামাটা জীবনের মিষ্টতা
১ টাকার আইসক্রিম, বরফ গোলা, চানাচুর–মুড়ির বিকেল; ঈদে নতুন জামা, পুকুরে সাঁতার, আর পাড়ার ঈদগাহ ময়দানে দেখা-সাক্ষাৎ — এগুলো ছিল জীবনের অমূল্য সুখ। তখনকার স্কুলজীবন ছিল শৃঙ্খলাবদ্ধ, বইয়ের পাতায় ছিল মজা, শিক্ষকের প্রতি ছিল শ্রদ্ধা আর ভক্তি।
—
✨ আজকের প্রেক্ষাপটে নব্বইয়ের শিক্ষা
বর্তমান প্রযুক্তিনির্ভর জগতে এই সময়টা শুধু স্মৃতির অ্যালবামে নয়, আমাদের মূল্যবোধের একটি অংশ হয়ে আছে। এই দশকের শিক্ষা আমাদের মনে করিয়ে দেয় — মানবিকতা, সংযোগ, এবং আনন্দ পেতে বড় কিছু দরকার হয় না।
Leave a Reply