চট্টগ্রামের রাউজানে দুই ছাত্রদল নেতাকে তুলে নিয়ে মারধরের পর মৃত ভেবে নদীর চরে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে বিএনপির এক নেতার ১৬ জন অনুসারীর বিরুদ্ধে। আজ শনিবার ভোরে রাউজান থানায় অপহরণ, চাঁদা দাবি ও হত্যাচেষ্টার এ মামলা করা হয়। মামলার বাদী হামলার শিকার উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীনের বাবা মুহাম্মদ শওকত আলী।
মামলার এজাহারে শওকত আলী বলেন, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁর ছেলে মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন (৩২) ও নোয়াপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন (৩০) স্থানীয় ইউপি কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে হঠাৎ ১০ থেকে ১২ জনের একটি দল এসে দুজনকে অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যায়। ওখান থেকে চৌধুরীঘাট কূলে নিয়ে দুজনকে হকিস্টিক, লোহার রড ও লাঠিসোঁটা দিয়ে মারধর করা হয়। তারা মারা গেছে ভেবে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে কচুখাইন গ্রামের কর্ণফুলী ও হালদা নদীর মোহনায় থাকা মাঝের চরে হাত, পা ও মুখ বেঁধে ফেলে দিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। তাঁর ছেলেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর মুক্তিপণ চেয়েছিল সন্ত্রাসীরা।
আহত জয়নালের বাড়ি নোয়াপাড়া ইউনিয়নের নিরামিশপাড়া এবং সাজ্জাদের বাড়ি কচুখাইন গ্রামে। তাঁরা দুজন উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। রাজনৈতিক কারণে তাঁদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করছেন বিএনপির নেতারা। দুজনই এখনো চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মামলার আসামিরা হলেন—মুহাম্মদ হাবিব (৪৭), শাহ আলম (৩৫), মুহাম্মদ লোকমান (৪৩), আব্দুর রশিদ (৪৭), মুহাম্মদ জাহেদ (২৫), জানে আলম (৩৮), মুহাম্মদ সোহেল (৩৫), কামরুল হাসান (৫৮), মুহাম্মদ রাজু (২৮), পাভেল (২৪) সহ ১৬ জন। আসামিদের সবাই কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। তবে তাঁদের দলীয় বা অঙ্গ সংগঠনের কোনো পদ পদবি নেই। এদিকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী দাবি করেছেন হামলা, সংঘর্ষে তাঁর কোনো কর্মী বা অনুসারী জড়িত নন। মামলার আসামিরাও ওই ঘটনায় দায়ী নয়।
এ বিষয়ে রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ১৬ জনকে আসামি করেছেন মামলার বাদী। আসামিদের গ্রেপ্তারে ঘটনার দিন থেকেই কাজ করছে পুলিশ।উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এ পর্যন্ত নোয়াপাড়া ইউনিয়নে অন্তত পাঁচবার হামলা ও গুলিবিদ্ধের ঘটনা ঘটে বিএনপির দুই পক্ষ কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী ও উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারীদের মধ্যে। সর্বশেষ ছাত্রদলের দুই নেতার ওপর হামলার ঘটনাও দুপক্ষের বিরোধের জেরে ঘটেছে বলে উভয় পক্ষের নেতা-কর্মীদের দাবি।
সম্পাদক : নূর আলম শেখ
পুরানা পল্টন, ঢাকা-১২০০।
ইমেইল : ajkerjagaran@gmail.com
Copyright © 2025 আজকের জাগরণ All rights reserved.